• ১৮ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ , ৪ঠা জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

আওয়ামী লীগ অবৈধ ক্ষমতা কুক্ষিগত রাখতে বাংলাদেশের স্বার্বভৌমত্বকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলেছে- জোনায়েদ সাকি

MR Monir
প্রকাশিত সেপ্টেম্বর ১৪, ২০২৩, ১৫:৪২ অপরাহ্ণ
আওয়ামী লীগ অবৈধ ক্ষমতা কুক্ষিগত রাখতে বাংলাদেশের স্বার্বভৌমত্বকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলেছে- জোনায়েদ সাকি

স্টাফ রিপোর্টার:আওয়ামী লীগ তার অবৈধ ক্ষমতা কুক্ষিগত রাখতে বাংলাদেশের স্বার্বভৌমত্বকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলেছে বলে মন্তব্য করেছেন গণসংহতি আনন্দলোনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি।

আজ ১৪ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার বিকেল ৪ টায় গণসংহতি আন্দোলনের ২১তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষ্যে শহীদ আব্দুর রব সেরনিয়াবাত বরিশাল প্রেসক্লাবে ‘বাংলাদেশে গণতন্ত্রের সংগ্রাম ও নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্তের ৩১ দফা শীর্ষক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।

গণসংহতি আন্দোলন বরিশাল জেলা সমন্বয়ক দেওয়ান আবদুর রশিদ নীলু’র সভাপতিত্বে ও জেলা কমিটির সম্পাদক মণ্ডলীর সদস্য সাকিবুল ইসলাম সাফিনের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন সংগঠনের প্রধান সমন্বয়কারী জননেতা জোনায়েদ সাকি, গণসংহতি আন্দোলন বরিশাল জেলা নির্বাহী সমন্বয়ক আরিফুর রহমান মিরাজ, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ওবায়দুল হক চান, বাকেরগঞ্জের সাবেক সংসদ সদস্য অধ্যাপক আব্দুর রশিদ, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) বরিশাল জেলার সাবেক সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম রাজন,বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) বরিশাল মহানগরের সদস্য সচিব মীর জাহিদুল কবির, বাংলাদেশ সম্মিলিত পেশাজীবি পরিষদ বরিশাল বিভাগের সদস্য সচিব ডাঃ মিজানুর রহমান, ভাসানী অনুসারী পরিষদ বরিশাল জেলা আহ্বায়ক অধ্যাপক মহসিন উল ইসলাম হাবুল, বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশন কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সাধারণ সম্পাদক সৈকত আরিফ।

উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের জেলা সহ- সমন্বয়কারী রুবিনা ইয়াসমিন, সহ- নির্বাহী সমন্বয়কারী জামান কবির, সম্পাদকমন্ডলীর সদস্য ইয়াসমিন সুলতানা, বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশন বরিশাল জেলা সাধারণ সম্পাদক রাইদুল ইসলাম সাকিব, বরিশালের সাবেক ছাত্রনেতা ও আইনজীবি হিরন কুমার দাস মিঠু ।

আলোচনা সভা শুরুতে গণতন্ত্র মঞ্চ কর্তৃক উত্থাপিত ৩১ দফা পাঠ করেন গণসংহতি আন্দোলন বরিশাল সম্পাদকমন্ডলী সদস্য হাছিব আহমেদ।

প্রধান আলোচকের বক্তব্য জোনায়েদ সাকি বলেন, ‘১৯৭১ সালে লক্ষ মানুষের আত্মত্যাগের মধ্যে দিয়ে যে রাষ্ট্রের পত্তন হয়েছিলো সেই রাষ্ট্র আজ টিকবে কিনা সেই ঝুঁকির মধ্যে ফেলে দিয়েছে বর্তমান ক্ষমতাসীন সরকার। এই সরকার অবৈধভাবে ক্ষমতা কুক্ষিগত রাখতে গিয়ে বাংলাদেশকে স্বার্বভৌমত্বের দিক থেকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলেছে। তারা গত ১৫ বছরে বাংলাদেশ রাষ্ট্রকে একটি দলিয় প্রতিষ্ঠানে পরিনত করেছে। নিপীড়নের হাতিয়ার হিসেবে তৈরি করেছে। কেবল জনগণের অধিকার হরন করেই তারা ক্ষান্ত হয় নি বরং জনগণের সম্পদ লুট করে দেশের অর্থনীতিকে দেউলিয়াত্বের দিকে নিয়ে গেছে৷ দেশে বিদ্যমান জনগোষ্ঠীর মধ্যে বিভাজন সৃষ্টি করে পুরো রাষ্ট্রকে অস্তিত্বের দিক থেকে হুমকির মধ্যে ফেলেছে। ৭২ সালে যে স্বৈরাচারী সাংবিধানিক বন্দোবস্তর সূচনা হয়েছিলো তার ওপর ভর করে গত ১৫ বছরে আওয়ামী লীগ সরকার  দেশকে একটা ফ্যাসিস্ট  ব্যবস্থায় উপনিত করেছে। দেশের জনগোষ্ঠীকে বিভক্ত করে, সমস্ত নাগরিকের অধিকার হরন করে দেশকে অর্থনৈতিক দেউলিয়াত্বের দিকে নিয়ে যাচ্ছে । কাজেই চলমান অর্থনৈতিক যে সংকট  ভয়াবহ রুপ নিতে যাচ্ছে সেই সংকট থেকে বের হওয়ার কোন রাস্তা তাদের জানা নেই। তাই এই সরকার টিকে থাকা মানে দেশের অর্থনীতিক সংকট আরো গভীরতর হওয়া ও সমস্ত দিক দিয়ে রাজনৈতিকভাবে দেশ বিপর্যস্ত হওয়া। তাই বর্তমান সরকারের পতন আর বাংলাদেশকে রক্ষা করা এই দুই এখন এক বিষয়ে পরিনত হয়েছে৷ যদি বাংলাদেশকে আমরা রক্ষা করতে চাই তাহলে অবশ্যই বিদ্যমান রাজনৈতিক বন্দোবস্ত বদলাতে হবে। স্বাধীনতা যুদ্ধের মধ্যে দিয়ে মানুষের মাঝে যে সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামজিক ন্যায়বিচারের আকাঙ্খা তৈরি হয়েছিলো তার উপযোগী রাষ্ট্র ব্যবস্থা গড়ে তোলার প্রশ্নকে গত ৫৩ বছরেও কেন্দ্রীয় প্রশ্নে পরিনত করা হয় নি। তাই এককেন্দ্রিক স্বৈরাচারী  ক্ষমতা কাঠামো বদলানোর রাজনীতি এখন জনগণের প্রধান রাজনীতি। এবারের সংগ্রাম দেশের প্রধান দুই শক্তির মধ্যকার ক্ষমতার লড়াই নয়। বরং ফ্যাসিবাদী সরকারের বিরুদ্ধে দেশের মুক্তিকামী মানুষের সংগ্রাম।  তাই মুক্তির লক্ষ্য  বিরোধী দলের চলমান আন্দোলনে ৩১ দফা কর্মসূচি এই শাসন ব্যবস্থা বদলানোর কর্মসূচি হিসেবে জনগনের সামনে হাজির হয়েছে৷ এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতা আন্দোলনের পরে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সংগ্রাম। ৷ আজকে আমাদের সবার সম্মিলিতভাবে মানুষের সামনে এটাই হাজির করা দরকার যে আমরা এবার লড়ছি রাষ্ট্রকে মুক্তিযুদ্ধের আকাঙ্খার গনতান্ত্রিক রাষ্ট্রে রূপান্তরের জন্য। আর বর্তমান সরকার তার জমিদারি কায়েমের জন্য সমস্ত রাষ্ট্রযন্ত্র ব্যবহার করে ফ্যাসিস্ট ব্যবস্থা টিকিয়ে রাখতে চাইছে। তাই দেশ বাঁচানোর জন্য এখন প্রয়োজন সম্মিলিত সংগ্রাম। কাজেই গণঅভুত্থানের মধ্যে দিয়ে সরকার পতন আমাদের দায়িত্ব হয়ে দাড়িয়েছে। সরকারকে জনগণের শক্তির ওপর দাঁড়িয়ে গলায় গামছা বেধে ক্ষমতার মসনদে থেকে নামাতে হবে৷ আমাদের ইস্পাত দৃঢ় ঐক্যর মধ্য দিয়েই এবারের  সংগ্রাম বিজয়ী হবে৷’

সভাপতির বক্তব্য দেওয়ান আবদুর রশিদ নীলু বলেন, ‘ফ্যাসিবাদী সরকার বাংলাদেশ রাষ্ট্র কাঠামোকে নানাভাবে  বিপর্যস্ত করেছে। নির্বাচনী ব্যবস্থা, প্রশাসন, আইন ও বিচার বিভাগ সহ সবকিছু পকেটস্থ করেছে। এই ফ্যাসিবাদ থেকে উত্তরণের পথ হলো সরকারের পদত্যাগ, অন্তবর্তীকালীন সরকারের অধীনে নির্বাচন ও রাষ্ট্রের গণতান্ত্রিক সংস্কার। এসব দাবি নিয়ে জনগণ আজ ১ দফার পক্ষে আন্দোলন করছে। অবিলম্বে সরকার পদত্যাগ করে সুষ্ঠু নির্বাচনের ব্যবস্থা না করলে জনগণ তার স্বার্থে রাজপথ দখলে নেবে। এখন ফ্যাসিবাদ থেকে উত্তরণে প্রয়োজন এই নতুন ৩১ দফা রাজনৈতিক বন্দোবস্তরের বাস্তবায়ন। আর এই বন্দোবস্তোর জন্য প্রয়োজন জনগণের বৃহত্তর গণ আন্দোলন গড়ে তোলা।’