• ৪ঠা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ , ২১শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বরিশালে পিস্তল নিয়ে ২ নেতার ধস্তাধস্তি!জাতীয় পার্টি ও শ্রমিকলীগের পাল্টাপাল্টি সংবাদ সম্মেলন

MR Monir
প্রকাশিত সেপ্টেম্বর ৪, ২০২৩, ১৩:৪১ অপরাহ্ণ
বরিশালে পিস্তল নিয়ে ২ নেতার ধস্তাধস্তি!জাতীয় পার্টি ও শ্রমিকলীগের পাল্টাপাল্টি সংবাদ সম্মেলন

খান মনিরুজ্জামান:বরিশালে জাতীয় শ্রমিক লীগ বরিশাল মহানগর কমিটির সাধারণ সম্পাদক মোঃ রইজ আহমেদ মান্না ও জাতীয় পার্টির জেলা কমিটির আহবায়ক এ কে এম মুরতজা আবেদীনের সাথে পিস্তল নিয়ে ধস্তাধস্তির ঘটনায় পাল্টাপাল্টি সংবাদ সম্মেলন হয়েছে।

জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান ও বরিশাল জেলা জাতীয় পার্টির আহবায়ক সিটি কাউন্সিলর এডভোকেট এ কে এম মুরতজা আবেদীন এর উপর হামলার প্রতিবাদে ও বিচার চেয়ে সাংবাদ সম্মেলন করেছে জাতীয় পার্টি বরিশাল জেলা ও মহানগর শাখার নেতৃবৃন্দ।

আজ ৪ সেপ্টেম্বর বেলা সাড়ে ১১ টায় শহীদ আবদুর রব সেরনিয়াবাত বরিশাল প্রেসক্লাবে
এই সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।

সংবাদ সম্মেলনে লিখত বক্তব্য পাঠ করেন,
জাতীয় পার্টি কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও বরিশাল মহানগর জাতীয় পার্টির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক এ.কে.এম মোস্তফা।

সংবাদ সম্মেলনে এ.কে.এম মোস্তফা বলেন, জাতীয় পার্টি কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান ও বরিশাল জেলা জাতীয় পার্টির আহবায়ক এডভোকেট এ কে এম মুরতজা আবেদীন বরিশাল সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে পরপর ৫ বার কাউন্সিলর নির্বাচিত হয়েছেন।

এ কে এম মুরতজা আবেদীনের জনপ্রিয়তায় ঈর্ষান্বিত হয়ে পূর্ব শত্রুতার জেড় ধরে গতকাল নগরীর পোর্ট রোড সেটেলমেন্ট অফিস থেকে অফিসিয়াল কাজ শেষে রাস্তায় বের হলেই বরিশাল মহানগর শ্রমিকলীগের সাধারণ সম্পাদক সন্ত্রাসী রইজ আহম্মেদ মান্না গংরা পরিকল্পিতভাবে তার উপর হামলা চালায়। হামলায় তিনি গুরুতর আহত হয়েছেন।

হামলার এক পর্যায়ে এ কে এম মুরতজা আবেদীন এর লাইসেন্স করা পিস্তল ছিনতাই করতে অপপ্রয়াস চালায় মান্না ও তার সহযোগীরা। যা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভিডিওতে পরিষ্কার দেখা গেছে।

তিনি বলেন,বরিশালের চিহ্নিত সন্ত্রাসী মান্না এ কে এম মুরতজা আবেদীনের উপর হামলা করার পরও মিথ্যা বানোয়াট তথ্য দিয়ে প্রশাসন সহ বরিশালবাসীকে বিভ্রান্ত করেছে তা আপনারা মুরতজা ভাইয়ের নিজের করা ভিডিওতে দেখতে পেরেছেন।

মান্না তার বাহিনী  রাস্তার উপর প্রকাশ্য দিবালকে অশালীন ভাষায় গালাগালি করে। এক পর্যায়ে মুরতজা ভাইয়ের গলা জাপটে ধরে শাসরুদ্ধ করে তাকে হত্যাচেষ্টা চালায়। আর মুরতজা ভাইয়ের বৈধ লাইসেন্সকৃত পিস্তল ছিনতাইয়ের চেষ্টা করে রইজ আহম্মেদ মান্না সহ তার ২০/২৫ জন সহযোগী।একপর্যায়ে অস্ত্র ছিনিয়ে নিতে না পেরে সন্ত্রাসী মান্না ও তার সহযোগীর মুরতজা ভাইয়ের অস্ত্র ধরে রেখে গুলির নাটক সাজায় এবং পুলিশকে ফোন করে থানায় সোপর্দ করে।

মোস্তফা আক্ষেপ নিয়ে বলেন, অপরাধীরা এখনও বুক ফুলিয়ে শহর দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। এদেরকে প্রতিহত করতে না পারলে মুরতজা ভাইয়ের মত আগামীতে আমরাও এই হামলার শিকার হতে পারি।তাই আমাদের সকলকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে এদের বিরুদ্ধে রুখে দাড়াতে হবে।

আর মুরতজা আবেদীন এর উপর হামলার ঘটনায় পুলিশ মামলা না নিলে তারা আদালতে মামলা করবেন বলে জানান।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, জাতীয় পার্টির বরিশাল মহানগর ও জেলার নেতৃবৃন্দ।

অপরদিকে বিকেল ৪ টায় জাতীয় শ্রমিকলীগ বরিশাল মহানগরের সাধারণ সম্পাদক মোঃরইজ আহমেদ মান্নাকে গুলি করে হত্যা চেষ্টার প্রতিবাদে শহীদ আবদুর রব সেরনিয়াবাত বরিশাল প্রেসক্লাবে পাল্টা সংবাদ সম্মেলন করেছে মহানগর শ্রমিক লীগ।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন জাতীয় শ্রমিকলীগ বরিশাল মহানগরের সাংগঠনিক সম্পাদক বেল্লাল হোসেন।
তিনি বলেন, এক সময়ের ক্রসফায়ারের তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী, বহু মামলার আসামী মুরতজা আবেদীন কর্তৃক পরিকল্পিতভাবে আমাদের সংগঠনের সাধারন সম্পাদক রইজ আহম্মেদ মান্নাকে প্রকাশ্য দিবালোকে জনসমক্ষে গুলি করে হত্যার চেষ্টা করলে ঘটনাস্থলে উপস্থিত জনগণ তা প্রতিহত করে এবং পরবর্তীতে মুরতজা আবেদীন কে পিস্তলসহ পুলিশে সোপর্দ করে।

বেল্লাল হোসেন দাবি করেন, মুরতজা আবেদীন প্রশাসন, সংবাদ মাধ্যম সহ অন্যান্য মহলে বিভিন্ন বিভ্রান্তিকর মিথ্যা তথ্য প্রদান করে ফয়দা লোটার চেষ্টা করছে। এই ঘটনায় বরিশালবাসী সহ সকল রাজনৈতিক মহলে ধোয়াশা তৈরী করার অপচেষ্টায় তিনি লিপ্ত আছেন।

আরও বলেন, মুরতজা আবেদীন বিগত ১২ ই জুন অনুষ্ঠিত বরিশাল সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন চলাকালীন সময়ে রইজ আহম্মেদ মান্না সহ তার মা বোন এবং তিন ভাই প্রত্যেকের বিরুদ্ধে মিথ্যা হয়রানী মূলক মামলা দায়ের করান। এরপর ষড়যন্ত্রমূলক ভাবে একটি মিথ্যা তথ্যসম্মলিত অডিও রেকর্ড প্রচার করেন যা আপনারা অবগত আছেন। মূলত ধারাবাহিকভাবে বরিশাল পৌরসভা থেকে শুরু করে বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের বর্তমান পরিষদ সহ সর্বমোট পাঁচবারের কাউন্সিলর থাকার পরে বিগত ১২ ই জুন নির্বাচনে সম্পূর্ন নতুন মুখ রইজ আহম্মেদ মান্নার বড় ভাই মুন্নার কাছে পরাজয়ের বেদনা তাকে বিকৃত মস্তিকের মানুষে পরিনত করেছে।

উপস্থিত সাংবাদিক ও প্রশাসনকে উদ্দেশ্যে বলেন, ঘটনার দিন কি কারনে মুরতজা আবেদীনের বুক পকেটে মোবাইল ফোন ছিলো? কি কারনেই বা মোবাইল ফোনের ভিডিও অন করা ছিলো? কি কারনে তিনি রইজ আহম্মেদ মান্নাকে উত্যক্ত করেছিলেন? এবং বারে বারে “আমাকে মারবি তাহলে মার” বলে আহবান জানাচ্ছিলেন?

তিনি বলেন এসব ঘটনা মুরতজার প্রত্যাশিত সাজানো নাটক ছিল। যা উনি ঘটনাস্থলে অভিনয় করে গেছেন।

সংবাদ সম্মেলনে বরিশাল মহানগর আওয়ামীলীগ ও শ্রমিক লীগের শীর্ষস্থানীয় নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।